বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড একটি নতুন প্রতিযোগিতা
যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার উদ্ধুদ্ধ করা। আমরা মনে করি, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সামাজের অমূল্য পরিবর্তন ঘটবে।

১.০ বুক অলিম্পিয়াড
বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড একটি নতুন উদ্যোগ। নতুন প্রতিযোগিতা। এরমাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের বইপড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করার একটি প্রয়াস। প্রযুক্তির যুগে বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বই বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দেশে ভয়াবহ মাদক, মূলবোধের অবক্ষয়ের প্রকাশ ঘটেই চলছে। এর প্রতিকার হিসেবে বইপড়া খুব জরুরি। এই অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভেতরে যেমন প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হবে, তেমনি তাদের মননশীল ভাবনা জন্ম দিবে।
২.০০ বুক অলিম্পিয়াড কেন প্রয়োজন
বুক অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইপড়ার আগ্রহ তৈরি হবে এবং তাদের জ্ঞান ও চিন্তাশীলতা বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের বাইরেও বিভিন্ন বিষয়ে বইপড়ার আগ্রহী করে তুলবে। এছাড়াও, এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার সঙ্গে দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করবে।
- জ্ঞান বৃদ্ধি : বুক অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে উৎসাহিত করে, যা তাদের পাঠ্য বইয়ের বাইরেও নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করবে।
- চিন্তাশীলতা বৃদ্ধি: এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বইয়ের সর্ম্পকে জানতে পারবে এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার দক্ষতা অর্জন করবে।
- প্রতিযোগিতার মনোভাব: বুক অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করে, যা তাদের আরও ভালো করার জন্য উৎসাহিত করবে।
- আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: এই ধরনের প্রতিযোগিতায় ভালো ফল করলে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করার জন্য অনুপ্রাণিত হবে।
- দক্ষতা বিকাশ: বুক অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের মধ্যে রিডিং, রাইটিং, এবং প্রেজেন্টেশন স্কিলের মতো বিভিন্ন দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করবে।
৩.০০ ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি
বুক অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা এবং কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে। কারণ এটি তাদের জ্ঞান, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করবে।
- ভিন্নতা: এই অলিম্পিয়াড অন্যান্য সাধারণ পরীক্ষার থেকে আলাদা, কারণ এখানে পাঠ্য বইয়ের বাইরেও বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান যাচাই করা হয়।
৪.০০ বুক অলিম্পিয়াডের লক্ষ্য
১. বইপড়া উদ্ধুদ্ধ করা
২.বইপড়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন স্বপ্ন দেখানো শক্তি জাগানো।
৩.আলোকিত মানুষ গড়ে তোলোর জন্য।
৪. সৃজনশীল ও মননশীল বিকাশ ঘটানো।
৫. সামাজিক অবক্ষয় দূর করে সুস্থ সমাজ বিনির্মাণ করা।
৫.০০ বুক অলিম্পিয়াডের উদ্দেশ্য
১. সারা দেশের শিক্ষার্থীদের বইপড়ার কর্মযোগ সঙ্গে যুক্ত করা।
২. বইপড়ার মাধ্যমে সমাজের নানা অবক্ষয় দূর করা। আলোকিত সমাজ গড়ে তোলো।
৩. দেশের লাইব্রেরিগুলো পুনর্জাগরণ করে পাঠক সমাজ সৃষ্টি করা।
৪. সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া বইপড়ার সুফল সম্পর্কে
৫. বুক অলিম্পিয়াড জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় ছড়িয়ে দেওয়া।
৬.০০ কারা অংশগ্রহণ করবে
স্কুল, কলেজ, মাদ্রসার শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। চারটি বিভাগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চারটি বিভাগের নাম চারটি বিখ্যাত বইয়ের নাম অনুসারে হবে।
- প্রাইমারি ( ঝিঙে ফুল) : ৩-৫ শ্রেণি; সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৩ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৫
- জুনিয়র (নকশী কাঁথার মাঠ) : ৬-৮ শ্রেণি; সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৬ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৮।
- সেকেন্ডারি (ছাড়পত্র): ৯-১০ শ্রেণি; এসএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং ও–লেভেল এবং ও–লেভেল পরীক্ষার্থী।
- হায়ার সেকেন্ডারি (গীতাঞ্জলি): একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং এ–লেভেল এবং ও-লেভেল পরীক্ষার্থী।
৬.০১ পরীক্ষার ধরন
পরীক্ষার তিন ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
১. এক কথায় প্রশ্ন-উত্তর লিখিত
২. বইয়ের উপর কুইজ
৩. আলোচনার উপর কুইজ
৬.০২ যা যা থাকবে:
ক. বইয়ের উপর এক ঘণ্টা কুইজভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা। (বিভিন্ন বিষয়ে বই: সাহিত্য, চলচ্চিত্র, সংগীত, প্রবন্ধ, খেলা, শিল্পকলা, গণিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি)
খ. স্কুলভিত্তিক দলগত মৌখিক কুইজ।
গ. বইবিষয়ক কুইজ
ঘ. বই প্রদর্শনী
ঙ. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে অংশ নেওয়া)
চ. সারপ্রাইজ পর্ব।
ছ. বই পড়ার বিষয়ক কর্মশালা
জ. প্রসিদ্ধ পরিদর্শন।
ঝ. পুরস্কার বিতরণী
ঞ. বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্প প্রভৃতি।
৬.০৩ আয়োজন সর্ম্পকে
- ৬৪টি জেলাকে ১০টি অঞ্চলে ভাগ করে আঞ্চলিক পর্যায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ীদের নিয়ে জাতীয় পর্যায় চুড়ান্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।
- অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক সার্টিফিকেট, কলম, প্যাড, স্যুভিনিয়র দেওয়া হবে। আঞ্চলিক পর্যায়ে ৭১ জনকে বিজয়ী করা হবে। বিজয়ীদের সার্টিফিকেট, বই, মেডেল ও টি-শার্ট পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে।
- আঞ্চলিক পর্যায়ে আয়োজন হবে এক দিনব্যাপী ও জাতীয় পর্যায়ে দুইদিন ব্যাপী আয়োজন করা হবে।
- বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায়ই প্রশ্ন করা হবে।
- বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকবে।
- জাতীয় পর্যায়ে ৪টি ক্যাটাগরির চারজনকে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়নস পদক’ দেওয়া হবে।
- জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীদের নিয়ে একটা বই বিষয়ক কর্মশালা, ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। এখান থেকে নির্বাচন করা হবে আর্ন্তজাতিক বুক অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার জন্য একটি দল।
- দলগত স্কুলভিত্তিক কুইজের প্রত্যেক আঞ্চলিক পর্যায়ের সেরা ৪টি স্কুল জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিবে। সেখান থেকে সেরা তিনটি স্কুলকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় নির্বাচন করা হবে। তাঁদের সনদসহ ট্রফ্রি দেওয়া হবে।
- কর্মশালা, সেমিনারগুলোতে আলোচক হিসেবে থাকবেন দেশের বিশিষ্ট লেখক, কবি, গবেষক, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিকিৎসক, উদ্যোক্ততাসহ নানা পেশার বৃদ্ধিজীবী।
- সারা বছর একটি বই পড়ার কর্মসূচি দেওয়া হবে, সেটার উপর আলোচনা থাকে, তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় পর্যায় পুরস্কার দেওয়া হবে।
৬.০৪ বুক অলিম্পিয়াড উপলক্ষে যা প্রকাশিত হবে
- বুক অলিম্পিয়াড কি? কেন প্রয়োজন? এই নিয়ে একটা স্যুভিনিয়র প্রকাশ।
- বুক অলিম্পিয়াড নামে একটি ওয়েবসাইট আছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও, লেখা, বইভিত্তিক নানা কিছু তথ্য-উপাত্ত থাকবে।
- প্রত্যেকটি আঞ্চলিক পর্যায়ে চার পাতা রঙিন একটি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
- বিজয়ী ও পুরো আয়োজন শেষ হলে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে।
- ওয়েবসাইট: bookolympiad.org
- ইউটিউব চ্যানেল: www.youtube.com/channel/bookolympiad.org
- সামাজিক মাধ্যম থাকবে।
৭.০০ আয়োজন
মুক্ত আসরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটি আয়োজন করবে।

বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটি প্রস্তাব
প্রধান উপদেষ্টা
- আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র
উপদেষ্টা
- ড. সেলিম জাহান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক
- মোহিত কামাল, কথাসাহিত্যিক ও সম্পাদক, শব্দঘর
- মনতোষ কুমার দে, অধ্যাপক, লেখক ও গবেষক
- ফজলুল কাদের, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)
- সিরাজুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক, প্রশিকা
সভাপতি
- রোকেয়া ইসলাম, কবি ও লেখক
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য
- দন্ত্যস রওশন, লেখক ও সাংবাদিক
- মুনির হাসান, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড
- ড. তারেক মনজুর, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ড. এলহাম হোসেন, অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, গ্রীণ বিশ্ববিদ্যালয়
- ড. কুদরত-ই হুদা, লেখক ও গবেষক
- আশীষ উর রহমান, সাংবাদিক ও লেখক
সাধারণ সম্পাদক
- আবু সাঈদ, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, মুক্ত আসর
সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য
- সাহাদাত পারভেজ, আলোকচিত্র, লেখক ও গবেষক
- শুভংকর কর্মকার, লেখক ও সাংবাদিক
- নমর্দা মিথুন, কবি ও সংগঠক
- বায়েজিদ ভূইয়া জুয়েল, কো অর্ডিনেটর, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড
- নুরুন্নবী চৌধুরী, প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক
- নূর কামরুন নাহার, কবি ও লেখক
- নাদিয়া ইসলাম নিতুল, চিকিৎসক ও সাংবাদিক
- আবির সালেহ উদ্দিন, শিক্ষক, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
- কৌশিক চাকমা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মুক্ত আসর
চিফ কো অর্ডিনেটর
- আয়শা জাহান নূপুর, কবি, সংগঠক ও শিক্ষক
কো অর্ডিনেটর, একাডেমি
- জাহিদ হোসাইন খান, লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক
- মিজানুর রহমান. প্রধান শিক্ষক, আলোক শিক্ষালয়
কো অর্ডিনেটর, কমিউনিকেশন
- আবুল বাশার মিরাজ, লেখক ও কৃষিবিদ
- অথৈ দাস, প্রতিষ্ঠাতা, বুকস অ্যান্ড মোর উইথ অথৈ
কো অর্ডিনেটর, আন্তর্জাতিক
- প্রিয়জিৎ দেব সরকার, লেখক ও আর্ন্তজাতিক বিশ্লেষক
- রাজিয়া সুলতানা, সংগঠক
কো অর্ডিনেটর, খুলনা
- মাসুম বিল্লাহ, গল্পকার
- কো অর্ডিনেটর, ঢাকা
- কো অর্ডিনেটর, চট্টগ্রাম
- কো অর্ডিনেটর, রংপুর
- কো অর্ডিনেটর, ময়মনসিংহ
- কো অর্ডিনেটর, রাজশাহী
- কো অর্ডিনেটর, সিলেট
